ইসরাইলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপ হচ্ছে। মানুষ খেতে পাচ্ছে না, শিশুরাও অভুক্ত, সদ্যোজাতেরাও যথাযথ সুরক্ষা পাচ্ছে না। খুবই মর্মান্তিক পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতি নিয়ে ঘোর উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা ‘হু’ও। এর আগে গাজায় মানুষের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা ‘হু’ বলছে, ফিলিস্তিনির গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে খাবারের ব্যাপক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও সেখানে তারা খাবার সরবরাহ করতে পারছে না। নানা রকম অসুবিধা সেখানে। তল্লাশি কেন্দ্রগুলোতে বিলম্বের ফলে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে খাদ্য সরবরাহের পর এক ত্রাণকর্মী বলেন, খাবার নিতে আসা মানুষের ভিড়ে দুজনকে দেখলাম দম বন্ধ হয়ে আসছে। প্রচুর লোকজনের ভিড়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ওই এলাকায় খাদ্য সরবরাহও তেমন করা যায়নি। মৃতদের নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ইসরাইলি বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া ফিলিস্তিনিদের লাশ দাফনে সময়ে এক চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এরা (মৃতেরা) কোথায় আহত হয়েছিলেন, এদের নাম-পরিচয়ই বা কী, সেসব কিছুই আমরা জানি না! রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী খান ইউনিসের আল-আমল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এখন তারা চিকিৎসকদের এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এলাকা ছাড়তে বলছে। ২০০৫ সালে ইসরাইল একতরফাভাবে গাজা থেকে তাদের সেনাবাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নেয়। এর মধ্য দিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে তাদের দীর্ঘ অবস্থানের অবসান হয়। তবে সেনাবাহিনী সরিয়ে নিলেও গাজা সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলের হাতে থেকে যায়। গত ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে ইসরাইল সরকার গাজার মানুষদের উৎখাত করা বা গাজা উপত্যকায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে মন্ত্রী বেন-গ্যভির যুক্তি দিয়েছেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের চলে যাওয়া এবং সেখানে নতুন করে ইসরাইলি বসতি গড়ে তোলাটাই সঠিক, ন্যায্য, নৈতিক ও মানবিক সমাধান হবে! ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৬,৭৫১ জন নিহত হয়েছে। আর হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১,১৩৯ জন নিহত হয়েছে।
সূত্র : জি নিউজ